সরফরাজ খান কি মনে মনে শুভমন গিলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন? এমনটা হতেই পারে। কারণ গিল ফিট থাকলে সরফরাজ হয়তো নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে ভারতীয় টিমেই ঢুকতেন না। এর আগে সুযোগ পেয়েও হতাশ করেছিলেন। বেঙ্গালুরুতে শূন্যে ফিরেছিলেন প্রথম ইনিংসে। সেই সরফরাজ খান দ্বিতীয় ইনিংসে দুরন্ত সেঞ্চুরি হাঁকালেন। চতুর্থ দিনের এক ঘণ্টার মধ্যে শতরান পূর্ণ করেন সরফরাজ। ১১০ বলে সেঞ্চুরি মুম্বইয়ের ছেলে সরফরাজের। ৫৭তম ওভারে টিম সাউদিকে বাউন্ডারি মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সরফরাজ। বল বাউন্ডারি লাইন স্পর্শ করতেই ক্রিজের এদিক ওদিক ব্যাট নিয়ে ছুটলেন। মুখে তাঁর তৃপ্তির হাসি। ব্যাট উপরে তুলে লাফিয়ে সেলিব্রেশন করলেন সরফরাজ। ঘরোয়া ক্রিকেটে সরফরাজ অনবদ্য। রানের ফোয়ারা বইয়েছেন সেখানে। এই প্রথম বার দেশের জার্সিতে সেঞ্চুরি করে বেশ তৃপ্ত দেখাল সরফরাজকে। সেঞ্চুরি করার পথে তাঁর ব্যাটে এসেছে ১৩টি বাউন্ডারি ও ৩টি ছক্কা।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চলতি বছরের শুরুতেই টেস্টে অভিষেক। এরপর থেকে দুটো অর্ধশতরান এসেছিল ব্য়াটে। কিন্তু শতরান আসছিল না। অবশেষে সেই লক্ষ্যও পূরণ হল সরফরাজের। ১১০ বলে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি পূরণ করেন সরফরাজ। আর ঠিক এমন সময়, যখন দলের তাঁর থেকে এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস ভীষণভাবে প্রয়োজন ছিল। গতকালই নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেছিলেন। ৭০ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছিলেন। চতুর্থ দিন কেরিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরিও পূরণ করলেন ডানহাতি এই তরুণ ব্যাটার।
ম্যাচের তৃতীয় দিন শুক্রবার ১৮ অক্টোবর দিনের শেষ বলে বিরাট কোহলি আউট হয়ে ফিরেছিলেন। তিনি ৭০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। সরফরাজ অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছিলেন। ১১০ বলে নিজের শতরান পূরণ করেন। নিজের শতরান পূরণ করার পথে ১৩টি বাউন্ডারি ও ৩টি ছক্কা হাঁকান। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মোট ১৬টি শতরান হাঁকালেন সরফরাজ বেঙ্গালুরুর শতরান নিয়ে। এর আগে ইরানি কাপে অবশিষ্ট একাদশের বিরুদ্ধে মুম্বইয়ের হয়ে দ্বিশতরান হাঁকিয়েছিলেন। সরফরাজই প্রথম মুম্বই ব্যাটার যিনি ইরানি কাপের মঞ্চে মুম্বইয়ের হয়ে দ্বিশতরান হাঁকিয়েছিলেন। তাঁর জীবনে বিতর্কও কিছু কম নয়। বয়স ভাঁড়ানোর অভিযোগে তাঁকে সাসপেন্ড করেছিল মুম্বই ক্রিকেট সংস্থা। শৃঙ্খলাজনিত কারণে এমসিএ–র ইন্ডোর অ্যাকাডেমি ক্যাম্প থেকেও নির্বাসিত করা হয় তাঁকে। ২০১৪–১৫ মরসুমে ঘরোয়া ক্রিকেটে তাঁর ম্যাচ ফি আটকে রাখা হয়েছিল। অনূর্ধ্ব–১৯ ক্রিকেটের একটি ম্যাচে নির্বাচকদের উদ্দেশে কিছু অঙ্গভঙ্গি করেছিলেন তিনি। ২০১৪–১৫ মরসুমের পরেই সরফরাজ মুম্বই ছেড়ে উত্তরপ্রদেশের হয়ে খেলতে চলে যান। সেখানে দু’টি মরসুম কাটালেও সাফল্য আসেনি। ২০১৯–২০ মরসুমে তিনি ফিরে আসেন মুম্বইয়ে। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সরফরাজকে। ক্রমাগত রান করে যান তিনি।
Leave Comments