প্রতিবেদনে - রাহুল সাহা : শীর্ষ টাইম ডেক্স: দলবিরোধী কাজের অভিযোগে শিক্ষক সেলের দুই নেতা-সহ কয়েকজনকে শুক্রবার বহিষ্কার করল তৃণমূল কংগ্রেস। এঁদের একজন দলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার সহ-সভাপতি মণিশঙ্কর মণ্ডল, অন্যজন মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি প্রীতম হালদার। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদন নিয়ে দলের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং একের পর এক নানা দলীয় নীতি ও আদর্শ বিরোধী কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগে দুজনকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন তৃণমূল শিক্ষা সেলের রাজ্য সভাপতি তথা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদনক্রমে দুই শিক্ষক নেতাকে এই বহিষ্কার হলেও একটি মহল বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। যদিও তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্ব বিভ্রান্তি খণ্ডন করে স্পষ্ট জানিয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের অনুমোদন নিয়েই ব্যবস্থা নেন।
শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই মণিশঙ্করকে মধ্য কলকাতার একটি কলেজে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। বিষয়টি নিয়ে পরে প্রকাশ্যেই অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে চলে যাওয়ার পর ধীরে ধীরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে যাতায়াত শুরু করেন মণিশঙ্কর।
আর সেই সূত্র ধরে প্রথমে ওয়েবকুপার সহ-সভাপতি পরে তাঁর ব্যক্তিগত আগ্রহে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক-পদ এবং কমিটিতেও জায়গা করে নেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর বেশ কিছু কার্যকলাপ দলের নীতি ও আদর্শের বিরুদ্ধে যেতে শুরু করে। তৃণমূল সূত্রে খবর, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর নানা পোস্ট সংগঠনের কর্মী ও সমর্থকদের মধে্য বিভ্রান্তি এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। মণিশঙ্করের মতো একই অভিযোগ আসতে থাকে প্রীতম হালদারের বিরুদ্ধেও। গোটা বিষয়টি দফায় দফায় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছেও পৌঁছয়। প্রথমে ব্রাত্য বসু দু’জনকে ডেকে অভিভাবকসুলভ মনোভাব নিয়ে সতর্কও করে দেন। কিন্তু মণিশঙ্কর ও প্রীতম শিক্ষামন্ত্রীর পরামর্শ এবং সতর্কবার্তাকে গুরুত্ব না দিয়ে দলের ও সংগঠনের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা চালিয়ে যেতে থাকেন।
একাধিক মহল থেকে দুজনের বিরুদ্ধে দলবিরোধী কাজের প্রচুর তথ্য ও প্রমাণ পেয়ে চরম বিরক্ত হন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বও। এরপরই বাধ্য হয়ে ব্রাত্য বসু শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদন নিয়ে মণিশঙ্কর-প্রীতম-সহ কয়েকজনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। শিক্ষামন্ত্রীর এই ঘোষণার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় মণিশঙ্কর নাম না করে ব্রাত্য বসুকে উদ্দেশ করে দাবি করেন, ‘‘ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার তাগিদে আমাকে দলবিরোধী আখ্যা দিয়ে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমি এর নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’ যদিও এনিয়ে শিক্ষামন্ত্রী কোনও মন্তব্য করেননি।
Leave Comments