দেবযানী দত্ত: জেনারেল পোস্ট অফিস বা জি. পি. ও -র মস্ত সাদা বিল্ডিংটা তো মোটামুটি সবারই জানা, কিন্তু পোস্ট অফিসের মেইন গেটের ঠিক পাশেই রয়েছে একটি সুদৃশ্য ক্যাফে তা অনেকেরই হয়ত অজানা। ক্যাফেটির নাম শিউলি, দা পার্সেল ক্যাফে (Siuli, The Parcel Cafe)। পোস্ট অফিসের নিজস্ব এই ক্যাফেটির যাত্রা শুরু হয় চলতি বছরের মার্চ মাসে। পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলের চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল মিঃ জে. চারুকেশি এর উদ্বোধন করেন। পোস্ট অফিসের কর্মচারীরা প্রত্যেকেই সরকারি। তাঁদের প্রত্যেকের লাল রঙের পোশাকে উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে হলুদ রঙের ভারতীয় পোস্টাল লোগো।
মাঝারি আয়তনের এই ক্যাফেটির অন্দরসজ্জা বেশ আকর্ষণীয়। মূল সাদা রঙের দেওয়ালে নানান রঙের ডাকটিকিটের বিশাল বিশাল রেপ্লিকা জ্বলজ্বল করছে। এগুলি হাতে তৈরি। দেওয়াল জুড়ে নানান রকম রঙের ডাক টিকিটের সমাহার দেওয়াল গুলিকে উজ্জ্বল করে তুলেছে। উঁচু সিলিং থেকে লম্বা লম্বা রড থেকে ঝুলছে বেশ কয়েকটা ফ্যান এবং শ্যান্ডেলিয়ার। দেওয়ালের রঙের সঙ্গে মানানসই বসার জায়গাগুলো। লাল সবুজ এবং ক্রিম রঙের টেবিল-চেয়ারে বসার ব্যবস্থা যেমন রয়েছে তার সঙ্গে রয়েছে সোফা আর টেবিলে বসার জায়গাও। সব আসবাব কাঠের তৈরি।
প্রতি টেবিলে পার্সেল ক্যাফের লোগো। দরজা দিয়ে ঢুকেই বাম দিকে চোখে পড়বে পার্সেল কাউন্টার। জিজ্ঞাসা করতে ওনারা বললেন পোস্ট অফিসের পার্সেল বিভাগের মতোই কাজ করে এটি। অর্থাৎ কেউ যদি কোনও কিছু পার্সেল করে কাউকে পাঠাতে চান তাহলে সেটি পার্সেল করা হয় এখান থেকে। তাছাড়া এনাদের নিজেদেরও ছোট্ট একটা কালেকশন রয়েছে যেখানে কিছু পোষাক, গ্রিটিংস কার্ড, শো পিস রয়েছে। সেগুলি কিনে কাউকে পাঠাতে চাইলে তাও পার্সেল করে দেওয়া হয়।
দরজার একেবারে ডানদিকে খাবার অর্ডার দেওয়ার কাউন্টার। সেখানে মেনুতে চোখ বুলোলে স্যান্ডউইচ,প্যাটিস,বার্গার,হটডগের ভেজ এবং নন -ভেজ অপশন দেখা যাবে। সাথে চা, কফি, কোল্ড ড্রিঙ্কস, আইসক্রিম, পেস্ট্রি এই সমস্তই পাওয়া যায়। সব আইটেমেরই দাম বেশ অল্প অথচ মানের দিক থেকে বেশ এগিয়ে রাখার মতন। কাউন্টারে পে করে আসলে ওনারাই টেবিলে গরম খাবার সার্ভ করে দেন বেশ দ্রুততার সঙ্গে। প্রশ্ন করতে জানতে পারলাম প্রচুর বিদেশী যাঁরা কলকাতা ঘুরতে আসেন পার্সেল ক্যাফেতে আসেন তাঁরা। প্রচলিত ক্যাফের ধারার মতোই আপনি স্বল্পমূল্যের পানীয় বা খাবার নিয়ে বেশ খানিকক্ষণ বসতে পারবেন এখানে। টেবিলে সুস্বাদু খাবার নিয়ে আড্ডা মারার সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় ডাকবিভাগের ঐতিহ্য ও গৌরবময় ইতিহাসকে স্মরণ করার জন্য এই ক্যাফেতে একবার ঢু মেরে আসতেই পারেন।
ক্যাফে খোলা থাকার সময় সকাল ১১ টা থেকে সন্ধ্যে ৬.৩০ টা ৭ টা। রবিবার বাদে বাকি সব দিনই খোলা।পাশেই ডাক বিভাগের একটি ডাকটিকিট সংগ্রহশালা তথা পোস্টাল মিউজিয়াম রয়েছে যেটি রবিবার বাদে সপ্তাহের বাকি দিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪ টে অবদি খোলা থাকে। ঘুরে আসতে পারেন।
Leave Comments