নীলাঞ্জন রায় চৌধুরী : দীর্ঘ একটা সময় বলিউড সিনেমা অন্ধকার একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। এমনকি বলিউডের নামজাদা সব স্টারেদের ভাগ্যও ছিল না সুপ্রসন্ন। কিন্তু এরপর এল ২০২৩।এই বছরটা যে শাহরুখ খানের বছর হতে চলেছে তার প্রথম আভাস পাওয়া গিয়েছিল 'পাঠান' রিলিজের সাথে সাথেই। প্রথম দিনেই পাঠানের বিশ্বব্যাপী কালেকশন ছিল প্রায় ১০৬ কোটি টাকা যা ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে একটা রেকর্ড। প্রথম সপ্তাহে প্রায় ৩৬৪ কোটি টাকা উপার্জন শুধুমাত্র ভারত থেকে। শেষ পর্যন্ত পাঠানের মোট বক্স অফিস কালেকশন দাঁড়িয়েছিল প্রায় ১০৫০ কোটি। পাঠানের প্রথম সাত দিনের বক্স অফিস কালেকশন দেখলেই তার সাফল্য স্পষ্ট চোখে পড়ে।
Day 1₹ 57 cr.
Day 2₹ 70.50 cr.
Day 3₹ 39.25 cr.
Day 4₹ 53.25 cr.
Day 5₹ 60.75 cr.
Day 6₹ 26.50 cr.
Day 7₹ 23 cr.
এরপরে এলো 'জওয়ান' যা পাঠানের তৈরী করা সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিলো! প্রথম দিনে জওয়ানের মোট কালেকশন দাঁড়ালো প্রায় ১২৯ কোটি যা পাঠানের থেকে প্রায় ২৩ কোটি বেশি। প্রথম সপ্তাহে ভারত থেকে জওয়ানের আয় প্রায় ৩৬৮ কোটি টাকা এবং বিশ্বব্যাপী আয় প্রায় ৬৬০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা। জওয়ানের সর্বমোট বক্সঅফিস কালেকশন দাঁড়ায় ১১৫০ কোটির বেশি যা পাঠানের থেকে আরো ১০০ কোটি বেশি।বোঝাই যাচ্ছে এই বছরটা শাহরুখ খানের, যার সিনেমা এবছর মোট ২২০০ টাকার বেশি কামিয়ে ফেলেছে গোটা বিশ্বজুড়ে।
'পাঠান' 'জওয়ান' এর মতো শাহরুখ খানের পরবর্তী ছবি ডাঙ্কিও সম্ভবত ব্লকবাস্টার হিট হবার পথেই পা বাড়িয়েছে। কারণ গতদিনে প্রি বুকিং- ওপেন হতে না হতেই প্রায় দেড় লক্ষ সিট্ বুক হয়ে গেছে! অর্থাৎ ইতিমধ্যেই শুধুমাত্র advance booking এই ডাঙ্কি কামিয়ে ফেলেছে প্রায় ৫ কোটি টাকা।এই ঘটনা ১৬ ই ডিসেম্বরের, ডাঙ্কির শুভমুক্তি ২১ শে ডিসেম্বর। প্রি বুকিং শুরুর দশ মিনিটের মধ্যে কলকাতার সাউথ সিটি মলের ৭০ শতাংশ সিট্ বুক হয়ে যাওয়া বুঝিয়ে দেয়, ডাঙ্কিও সম্ভবত শাহরুখ খানের এবছরের তৃতীয় ছবি হিসেবে কোটি ক্লাবে পদার্পন করতে চলেছে।
ডাঙ্কি নিয়ে ফ্যান আর দর্শকদের মধ্যে তৈরি হওয়া উত্তেজনার আরও কিছু নমুনা দেখা যাক : শহরের নামকরা পিভিআর মানি স্কোয়ারে ছবি মুক্তি পাওয়ার দিন অর্থাৎ ম্যাটিনি শোয়ের সিটের দাম যথাক্রমে সামনে বসলে ৪২০ টাকা, মাঝখানে বসলে ৪৭০, এবং রেকলাইনারে ৭২০. সমস্ত শোয়ের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সিট্ এখনই ভরে গেছে, একমাত্র লেট নাইট শোগুলিতে এখনও অবদি কিছু শতাংশ সিট খালি থাকতে দেখা গিয়েছে। অন্যদিকে শহরের আরেক নামজাদা মল সাউথ সিটি আইনক্সের দাম আরো চড়া। ম্যাটিনি শোয়ের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে যথাক্রমে, সামনের সিট ৪৮০ টাকা, মাঝখানের সিটগুলোর চাহিদা বেশি থাকায় দাম ৫৬০ টাকা এবং রেকলাইনার সিটগুলো ১২৫০ টাকায় পাওয়া যাবে। এখানেও যথারীতি সকাল থেকে বেশিরভাগ শোয়ের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশের প্রিবুকিং হয়ে গেছে, শুধুমাত্র রাতের শো গুলো এখনো পর্যন্ত প্রায় ফাঁকাই আছে। অন্যদিকে ফোরাম,অ্যাক্রপোলিস,লেক মল,বিভিন্ন পি ভি আর গুলিতে ৪০০ টাকার নীচে কোনো সিট নেই এবং বেশিরভাগেরই প্রিবুকিং হয়ে গেছে। সবচেয়ে কম টাকায় ম্যাটিনি শো তে ডাঙ্কি দেখতে গেলে আপনাকে বেছে নিতে হবে কলকাতার আশেপাশের কিছু সুবার্ব এরিয়ার inox গুলি। যেখানে এত রমরমা বাজারেও তিনশো টাকার নিচে সিনেমা দেখা সম্ভব।
যদি ডাঙ্কিও হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যবসা করে তাহলে সম্ভবত যে রেকর্ড শাহরুখ খান করে যাচ্ছেন তা অদূর ভবিষ্যতে কোনো অন্য অভিনেতা ভাঙতে পারবেন বলে তো মনে হচ্ছে না। অবশ্য শাহরুখ নিজেই তো বলে দিয়েছেন যে তিনিই বলি সিনেমা ইনডাস্ট্রির শেষ ষ্টার।
ছবি: সংগৃহীত
Leave Comments