শীর্ষ টাইমস ডেস্ক: হেমন্ত শেষ হল বলে। ক্যালেন্ডার বলছে, শীতকাল পড়তে হাতে আর কটা দিন। শরতের উৎসবের মরশুম শেষ হতে না হতেই হৈমন্তিক অনুভূতিকে সঙ্গে নিয়ে শুরু হয়ে যায় শীতের প্রস্তুতি। শীতকাল মানেই সুস্বাদু খাবার, পিকনিক, পার্টি, রংচঙে গরম পোশাক, বেড়াতে যাওয়া আর মন জুড়ে আনন্দ শুধুই আনন্দ। গত বছর করোনা ভাইরাসের দাপটে প্রায় গোটা শীতকালই মাটি হয়েছে। কিন্তু এবছর শীতকে হাতছাড়া করা যাবে না। আরকিছু না হোক পিকনিক সেরে নিতেই হবে। তাই কলকাতার খুব কাছেই একডজন পিকনিক স্পটের খোঁজ দেওয়া হল আজ।
বাবুর হাট
যত দিন যাচ্ছে কলকাতার খুব কাছে অবস্থিত বাবুর হাটের জনপ্রিয়তা ততই বাড়ছে। কারণটা আর কিছুই নয়, ইট, কাঠ, পাথরের শহরের থেকে দূরে দু দণ্ড শান্তির জন্য গ্রাম্য পরিবেশে ঘণ্টা কয়েক কাটানোর আদর্শ জায়গা এই বাবুর হাট। কলকাতা থেকে উত্তর ২৪ পরগনার বাবুর হাটের দূরত্ব প্রায় ৪৮ কিলোমিটার। খুব বেশ হলে দুই ঘণ্টা লাগবে সেখানে পৌঁছোতে। সবুজ ধানের খেত, পুকুর, গাছপালার মাঝে মন শান্ত হয়ে উঠবে। যে কোনও সাহায্যের জন্য সাহায্যের জন্য গ্রামের লোকেরা সদা প্রস্তুত।
দেউলটি
দেউলটিতে রয়েছে একটি সুন্দর খামারবাড়ি। আর সেখানেই রয়েছে পিকনিক করার যাবতীয় ব্যবস্থা। সঙ্গে গ্রামের প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগ ফ্রি। চারদিকে রয়েছে প্রচুর নারকেল গাছ। ইচ্ছে হলেই ডাবের জল খেতে পারবেন, পুকুরে মাছ ধরতে পারবেন, গ্রাম ঘুরতে পারবেন আর পাবেন বিশুদ্ধ বাতাস। পিকনিক স্পট থেকে কাছেই রয়েছে কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি। কলকাতা থেকে ফলতার দূরত্ব ৬৩ কিলোমিটারের সামান্য বেশি।
টাকি
ইছামতি নদীর ধারে অবস্থিত ছোট্টো শহর টাকি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ছিমছাম শহর। আর বাঙালির প্রিয় পিকনিক স্পট। শরতে যান বা শীতে, টাকি সবসময়ই সুন্দর আর মনোরম। কলকাতা থেকে মাত্র ৬৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টাকির ইছামতি নদীর ওপারেই রয়েছে বাংলাদেশ। নৌকা করে প্রতিবেশী দেশে খানিকটা কাছাকাছি ঘুরে আসতেই পারেন। কয়েকজন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের নাগরিকের সঙ্গেও দেখা বা কথা হয়ে যেতে পারে। এখানে হোটেল রিসর্ট সবই আছে। প্রয়োজনে উইকেন্ড কাটানো যায় আরামসে।
মাছরাঙা দ্বীপ
মাছরাঙা দ্বীপে দেখতে পাবেন প্রচুর মাছরাঙা পাখি। ইছামতি এবং ভাসা নদীর মাঝেই রযেছে এই দ্বীপটি। এর খুব কাছেই রয়েছে বাংলাদেশ। তবে দ্বীপের নাম মাছরাঙা হলেও খানে বহু প্রজাতির পাখিই বাস করে। শীতকালে আসে পরিযায়ী পাখিরাও। টাকি কিংবা হাসনাবাদ থেকে মাছরাঙা দ্বীপ সহজেই যাওয়া যায়। সারাদিন এই দ্বীপে আনন্দ করে কাটান। প্রচুর খাওয়া দাওয়া করুন। সূর্যাস্ত দেখে বাড়ি পথে রওনা হোন।
পিয়ালি দ্বীপ
পিয়ালি নদীর ধারে পিয়ালি দ্বীপটি বড় সুন্দর। সারাটা দিন বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় পরিজনজের সঙ্গে হই হই করে দিন কাটানোর জন্য আদর্শ। চারদিকে প্রকৃতির শোভা আপনাকে হাতছানি দেবে। প্রকৃতির মাঝে দারুণ ফোটোসেশন করা যায়। পিয়ালি দ্বীপের কাছেই আছে সুন্দরবন টাইগার ক্যাম্প। পিকনিকের মাঝে সেখানে গিয়ে বাঘমামাকে দর্শন করার সৌভাগ্যও জুটতে পারে। জঙ্গলের মাঝে পিয়ালি দ্বীপে একবার অন্তত ঘুরে আসা উচিত। আনন্দ, অ্যাডভেঞ্চার, খাওয়া দাওয়া সবই হবে।
গাদিয়ারা
কলকাতার খুব কাছে আরেকটি অপূর্ব সুন্দর পিকনিক স্পট হল গাদিয়ারা। একেবারে নিরিবিলি স্থানটিতে নৌকাবিহার, প্রকৃতি দর্শন সবই হবে। এখানে পিকনিক করলে মাছ কিনতে হবে না। সামুদ্রিক মাছ, কাঁকড়া, চিংড়ি পেয়ে যাবে বেশ কম দামে। একেবারে টাটকা। প্রকৃতির কোলে বসে টাটকা মাছ আর নরম গরম পানীয় পিকনিক জমিয়ে তুলবে। কলকাতা থেকে গাদিয়ারার দূরত্ব প্রায় ৭৯ কিলোমিটার।
ছবি: সংগৃহীত
Leave Comments