শীর্ষ টাইমস ডেস্ক: জৈন ধর্মে দুই ধরণের সম্প্রদায় রয়েছে। শ্বেতাম্বর ও দিগম্বর। সাধুদের উভয় সম্প্রদায়ই দীক্ষা গ্রহণের পর কঠোর জীবনযাপন করে। তারা সত্যিকারের সম্মান ও শৃঙ্খলায় জীবনযাপন করেন। তাঁরা কোনও ভোগ্যপণ্য বা সম্পদ ব্যবহার করে না। শ্বেতাম্বর সাধুরা তাদের শরীর শুধুমাত্র একটি পাতলা সুতির কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখেন৷
দিগম্বর সাধুরা কোনও পোশাক বা কাপড় পরেন না, কিন্তু জৈন সাধুরা অবশ্যই শাড়ির আকারে সাদা পোশাক পরেন। প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যেও তাঁরা শুধুমাত্র ওই একটি সাদা কাপড়ই পরিধান করে থাকেন৷ এদিকে শ্বেতাম্বর সাধুরা প্রবল ঠান্ডাতেও কোনও রকমের কোনও পোশাকই পরে না। হ্যাঁ, শ্বেতাম্বর সাধুরা তাঁদের ১৪ টি জিনিসের মধ্যে একটি কম্বল রাখেন। এটি অত্যন্ত পাতলা এবং এটি তাঁরা এটি শুধুমাত্র ঘুমানোর সময় ব্যবহার করেন৷ এই সমস্ত সন্ন্যাসী-সন্ন্যাসিনীরা ঋতু যাই হোক না কেন মাটিতে শুয়েই ঘুমান। বিছানা নয়, মাদুরে ঘুমাতে পারেন। অনেক সময়ে শুকনো ঘাসও ঘুমানোর জন্যও ব্যবহার করা হয়। এই সাধুদের ঘুমের জন্যেও খুব কম সময় বরাদ্দ করা হয়।
সকলকে অবাক করে দেওয়ার মতো আরও একটি তথ্য এই যে জৈন সন্ন্যাসীরা কখনও স্নান করেন না। স্নান করলে জীবাণুর মৃত্যু হয়৷ কোনওরকম মৃত্যু তাঁদের হাতে হোক তা তাঁরা চান না৷ জীবাণুদের জীবনকে হুমকি বলে মনে করা হয়। এ কারণে তাঁরা স্নান করেন না। তাঁদের মুখে সবসময় একটি কাপড় দিয়ে ঢাকা থাকে। যা মুখ দিয়ে শরীরে কোনও জীবাণু প্রবেশ করতে বাধা দেয়। জৈন সন্ন্যাসীরা অভ্যন্তরীণ স্নান করেন। ধ্যানে বসে অভ্যন্তরীণ স্নান করে মন ও চিন্তা শুদ্ধ করাকে বলা হয়। তাঁদের জন্য স্নান মানে আবেগের শুদ্ধিকরণ। সাধু ও সাধ্বীরা কয়েক দিন পর পর একটি ভেজা কাপড় নিয়ে শরীর মুছে স্নান করে। এই কারণে তাঁদের শরীর সবসময় সতেজ এবং পরিষ্কার দেখায়।
জৈন তপস্বীরা চরম সরলতার জীবনযাপন করে, জীবন থেকে সমস্তরকম বস্তুগত সম্পদ ত্যাগ করে। দেশ হোক বা বিদেশে সর্বত্রই জৈন সন্ন্যাসী - সন্ন্যাসিনীরাও একই রকম জীবনযাপন করেন। জৈন সম্প্রদায় তাঁদের আশ্রয় ও খাবার সুনিশ্চিত করে। তাঁরা জৈন মন্দির সংলগ্ন মঠে বাস করে।
ছবি: সংগৃহীত
Leave Comments