বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে এই মুহূর্তে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পুরোপুরি ব্যাকফুটে টিম ইন্ডিয়া। বৃষ্টিবিঘ্নিত টেস্টে প্রথম দিনে কোনো খেলাই হয় নি। দ্বিতীয় দিন টসে জিতে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়ে ডুবেছিলো ভারতীয় দল। ভিজে পিচ, স্যাঁতস্যাঁতে, মেঘলা আবহাওয়াকে কাজে লাগিয়ে জ্বলে উঠেছিলেন কিউই পেসাররা। অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ব্যর্থতার শিকার হয়ে মাত্র ৪৬ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিক দেশ। এরপর ব্যাট করতে নামা নিউজিল্যান্ডকে বেশ সাবলীলই দেখিয়েছিলো গতকাল। ডেভন কনওয়ে, উইল ইয়ং-দের সৌজন্যে দ্রুত লিড পেয়ে যায় তারা। ম্যাচের তৃতীয় দিন সকালেও জারি থাকলো কিউইদেরই দাপট। দুর্দান্ত শতরান করেন রচিন রবীন্দ্র। তাঁর ১৩৪ রানের ইনিংসের সৌজন্যে প্রথম ইনিংসে ‘ব্ল্যাক ক্যাপস’দের সংগ্রহ ৪০২। ভারতের বিরুদ্ধে ৩৫৬ রানের বিশাল লিড ছিনিয়ে নিলো তারা।
প্রসঙ্গত প্রথম ইনিংসে, ভারতীয় দলের ব্যাটাররা একটি লজ্জাজনক পারফরম্যান্স করেছিলেন। যার ফলস্বরূপ গোটা টিম ইন্ডিয়া মাত্র ৪৬ রানে গুটিয়ে যায়। পরিস্থিতি এমন ছিল যে পাঁচ ব্যাটসম্যান খাতা না খুলেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। প্রথম দিন ম্যাচটি ভেসে যাওয়ার পর দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু হয়। লাঞ্চের পর, টিম ইন্ডিয়ার প্রথম ইনিংস ৩১.২ ওভারে মাত্র ৪৬ রানে সীমাবদ্ধ ছিল। বিরাট কোহলি, সরফরাজ খান, রবীন্দ্র জাদেজা, কেএল রাহুল, রবিচন্দ্রন অশ্বিন খাতা না খুলেই আউট হন। ঋষভ পন্ত (২০ রান) এবং যশস্বী জয়সওয়াল (১৩ রান) একমাত্র দুই ব্যাটসম্যান ছিলেন যারা দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছিলেন।
নিউজিল্যান্ড ব্যাটিং করতে আসার পর ২৫০ রানের মধ্য প্রতিপক্ষকে গুটিয়ে দেওয়ার লক্ষ্য সামনে রেখে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়িয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। কিন্তু বেঙ্গালুরুতে তাঁর যাবতীয় পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েই চলেছে। টিম সাউদীকে সাথে নিয়ে রুখে দাঁড়ান রচিন রবীন্দ্র। দুই প্রান্ত থেকেই ঝড়ের গতিতে রান আসতে থাকে। প্রায় ৯০ স্ট্রাইক রেটে ঝোড়ো ৬৩ রানের ইনিংস খেলতে দেখা গেলো সাউদীকে। শ্রীলঙ্কা সিরিজের পর নেতৃত্ব ছেড়েছেন। ব্যাট হাতে বেশ চাপমুক্ত লাগলো তাঁকে। ৮টি চার ও ৪টি ছক্কা হাঁকান। বেঙ্গালুরু থেকেই নিউজিল্যান্ড পাড়ি দিয়েছিলেন রচিন রবীন্দ্রের বাবা রবি। এখনও তাঁর আত্মীয়-পরিজনেরা রয়েছেন এই শহরে। সেই ‘ঘরের ছেলে’ই আজ পথের কাঁটা হয়ে উঠলো টিম ইন্ডিয়ার জন্য। অসামান্য শতরান এলো তাঁর ব্যাট থেকে। এই নিয়ে টেস্ট কেরিয়ারে দ্বিতীয়বার তিন অঙ্কের মাইলস্টোন স্পর্শ করেন তিনি। সাউদী’কে ফেরান সিরাজ। এরপর কুলদীপ যাদবের লেগ বিফোর হন আজাজ প্যাটেল। ভারতের সাথে নিজেদের ব্যবধান বাড়াতে এরপর দ্রুত গতিতে রান তোলার প্রয়াস শুরু করেন রচিন। শেষমেশ কুলদীপের বলে যখন উইকেট হারালেন তখন তাঁর নামের পাশে ১৩৪। ভারতের তোলা ৪৬ রানের জবাবে ৪০২ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পেরেছে নিউজিল্যান্ড। লিডের পরিমাণ ৩৫৬। বাকি আর দুই দিন। বিশাল অঘটন না ঘটলে এই ম্যাচ জেতা সম্ভব নয় ভারতের পক্ষে। বেঙ্গালুরুতে খেলা শুরু হওয়ার আগে সাংবাদিক সম্মেলনে কোচ গৌতম গম্ভীর জানিয়েছিলেন যে একদিনে ৪০০ তোলার পাশাপাশি প্রয়োজনে দুই দিন ব্যাটিং করে ম্যাচ ড্র করতেও দলকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে চান তিনি। চিন্নাস্বামীতে এখন সেই চ্যালেঞ্জের মুখেই রোহিতরা। হেনরী-সাউদী-ও’রোর্কদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধই একমাত্র রাস্তা ভারতের সামনে।
Leave Comments