শীর্ষ টাইমস ডেস্ক:ভারতমাতার বহু বিপ্লবী সন্তানদের অনেক রক্তের বিনিময়ে দীর্ঘ সংগ্রামের পর স্বাধীনতা এসেছিল আমাদের। স্বাধীনতায় নারী বাহিনী ও পিছিয়ে ছিল না। সুভাষচন্দ্র বসু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় জাপানের সাহায্যে মুক্তিসংগ্রাম পরিচালনা কালে ১৯৪৩ সালে ১২ জুলাই ভারতে একটি নারী বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা গ্ৰহন করেন এবং পরিকল্পনা মত ১৯৪৩ সালে ১৬ জুলাই নেতাজি সিঙ্গাপুরে ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী স্বামীনাথনের নেতৃত্বে ঝাঁসির রাণী রেজিমেন্ট গড়ে তুলে ছিলেন। সুভাষচন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দ বাহিনীর নারী বাহিনীর অন্যতম ছিলেন লক্ষী সেহগল। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সক্রিয় কর্মী ছিলেন লক্ষী সেহগাল। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ পেশা ছেড়ে আজাদ হিন্দ ফৌজের রাণী ঝাঁসি রেজিমেন্টের দ্বায়িত্ব গ্ৰহন করেন। এশিয়াতে এই নারী বাহিনীই ছিল সর্বপ্রথম এক সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গির পরিচায়ক। রাণী ঝাঁসির নারী বাহিনীর দ্বায়িত্ব ছাড়াও তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজের নারী সংগঠন বিভাগের মন্ত্রী ছিলেন।
নারী বাহিনীর সদস্যাদের মেশিনগান ও টমিগান চালানো, হাতবোমা ছোড়া, রাইফেল চালানো প্রভৃতির প্রশিক্ষণ নিতে হতো।এছাড়া ছয় মাস কঠোর সামরিক শিক্ষাগ্রহণ করতে হতো।
জাপান ভারতের মাটিতে মিত্রশক্তিভুক্ত ব্রিটিশ শক্তিকে আক্রমণ করতে এগিয়ে এলে আজাদ হিন্দ বাহিনী ও ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী স্বামীনাথনের নেতৃত্বে ঝাঁসি বাহিনী সিঙ্গাপুর থেকে ব্রহ্মদেশের দিকে এগোতে থাকে। এদিকে হঠাৎ বিশ্বযুদ্ধের গতি পরিবর্তন এবং মিত্রশক্তিভুক্ত বাহিনীর হাতে জাপানের পরাজয়ে জাপান সরকার সাহায্যদান বন্ধ করে দিলে আজাদ হিন্দ বাহিনীতেও বিপর্যয় নেমে আসে। শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ বাহিনী পরাজিত হয়। ১৯৪৫ সালে ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী স্বামীনাথন ব্রিটিশ সেনার হাতে গ্রেফতার হন। এবং ১৯৪৬ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত তিনি বার্মার জেলে বন্দি ছিলেন ।
ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে আজাদ হিন্দ ফৌজের নারীবাহিনী যে অবদান রেখেছিল তা অদূর ভবিষ্যতেও ভারতীয় নারীসমাজকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে।
Leave Comments