প্রতিবেদনে - রাহুল সাহা : শীর্ষ টাইম ডেক্স: সব কিছু ঠিকঠাক চললে, আজ শুক্রবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ঘিরে অনন্ত নাটকের উপর যবনিকা পড়তে চলেছে। তিন মাসও আর বাকি নেই যে টুর্নামেন্টের। আজ, শুক্রবার আইসিসির বোর্ড বৈঠক। সেখানে তিনটে পথের মধ্যে যে কোনও একটা নেওয়া হতে পারে।
১) হাইব্রিড মডেল। যেখানে টুর্নামেন্টের অধিকাংশ ম্যাচ খেলা হবে পাকিস্তানে। শুধুমাত্র ভারতের ম্যাচগুলো অন্য দেশে হবে।
২) টুর্নামেন্টকে পুরোই পাকিস্তানের বাইরে নিয়ে চলে যাওয়া। তবে টুর্নামেন্টের হোস্টিং রাইটস পাকিস্তানের হাতেই থাকবে।
৩) পুরো টুর্নামেন্টই পাকিস্তানে খেলা হবে। কিন্তু টুর্নামেন্টে ভারত থাকবে না।
পরিস্থিতি যা, তাতে শেষের পথ অনুমোদনের সম্ভাবনা প্রায় নেই-ই। কারণ, ভারত যদি না খেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, তা হলে বিশাল আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতির মুখে পড়তে হবে পাকিস্তানকে। আবার হাইব্রিড মডেলের পন্থাকেও সর্বসম্মত ভাবে গ্রহণ করা কঠিন। কারণ, পাকিস্তানের তরফে বৃহস্পতিবার আবারও ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, হাইব্রিড মডেলকে তারা কোনও ভাবে মেনে নেবে না। বারো ঘণ্টা আগেও হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হওয়া নিয়ে একটা আশার আলো দেখা গিয়েছিল। কারণ, পাকিস্তান কিছুটা হলেও সুর নরম করেছিল তখন। পাকিস্তান বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নকভি বলে দিয়েছিলেন যে, আইসিসি বোর্ড যে সিদ্ধান্ত নেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে, তা তাঁরা দেশের সরকারের কাছে পৌঁছে দেবেন।
তবে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, শেষ পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পাশ হয়ে যেতে পারে। সেটা হল, ভবিষ্যতে আইসিসি টুর্নামেন্টে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থাকে পাকিস্তানের জন্যও হাইব্রিড মডেলের বন্দোবস্ত করতে হবে। আগামী বছর ভারতে মহিলা বিশ্বকাপ রয়েছে। এশিয়া কাপ রয়েছে। ২০২৬ সালে আবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ রয়েছে ভারতে। ২০২৯ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও ভারতে। পাকিস্তানের তরফে বলা হতে পারে যে, সেসময় তারাও ভারতে টিম পাঠাবে না। তখন পাকিস্তানও নিজেদের ম্যাচ খেলবে অন্যত্র। ভারতে গিয়ে খেলবে না। পাক সরকার তখন আর ভারতে গিয়ে আইসিসি টুর্নামেন্ট খেলার সবুজ সঙ্কেত দেবে না।
মুশকিল হল, হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি যদি সম্মতি পেয়েও যায় শেষ পর্যন্ত, তা হলেও সমস্যা থাকবে। সেটা হল, তখন ভারত ও পাকিস্তান- দু’টো দলকে ভিন্ন গ্রুপে রাখা হবে কি না? কিন্তু সেটা করাও সহজ নয়। সেক্ষেত্রে গ্রুপে ভারত-পাকিস্তান মহাযুদ্ধ হবে না। ব্রডকাস্টারদের তরফ থেকে ঘোর আপত্তি আসতে পারে। এমনিই তারা আইসিসিকে তাড়া দিচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি চূড়ান্ত করার জন্য। কারণ চুক্তি অনুযায়ী, টুর্নামেন্ট শুরুর তিন মাস আগে টুর্নামেন্টের দিনক্ষণ আইসিসিকে জানাতে হবে ব্রডকাস্টারদের। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে যা তারা এখনও দিয়ে উঠতে পারেনি। তার উপর গ্রুপে যদি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচই না হয়, তা হলে আর্থিক ভাবে লাভ হবে না ব্রডকাস্টারদের। তাই সব মিলিয়ে আজ বোর্ড বৈঠকের আগে আইসিসি যে প্রবল চাপে, লিখে দেওয়াই যায়। একটাই ব্যাপার তাদের পক্ষে যেতে পারে। সেটা হল, বর্তমানে পাকিস্তানের টালমাটাল রাজনৈতিক পরিবেশ। যে টানাপোড়েনের কারণে শ্রীলঙ্কা ‘এ’ টিমের পাকিস্তান সফরকেও কাটছাঁট করতে হয়েছে।
Leave Comments