শীর্ষ টাইমস ডেস্ক:
অ্যাডেনোভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে বাংলা। একের পর এক শিশুমৃত্যুতে উদ্বেগ...
স্বাস্থ্য Feb 21, 2023 0 Add to Reading List
এর মধ্যেই কিছুদিন আগে বি. সি. রায় শিশু হাসপাতালে মারা যায় দু টি শিশু। এদের নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে ধরা পড়ে ভয়ঙ্কর ভাইরাস অ্যাডেনো-র উপস্থিতি। জানা যায় এর মূলত দু'টি স্ট্রেইন মারাত্মক। একটি...
বুলেটিন্স ওয়ার্ল্ড ডেস্ক : সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে আতঙ্কে দিন-রাত কাটাচ্ছেন শিশুদের বাবা-মা, বাড়ির লোক। সেই আতঙ্কের কারণ অ্যাডেনো ভাইরাস। যার জেরে ঘরে ঘরে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া সাথে ডায়রিয়া আর কনজাংটিভাইটিস্। ঘন ঘন শিশুমৃত্যুর খবরে শিউরে উঠছেন সব অভিভাবকেরাই। সরকারি নির্দেশনা জারি হলেও তা নিয়ে এখনও সচেতন নন অনেকেই। কারোর মুখে নেই মাস্ক। ফলে প্রচন্ড সংক্রামক এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে দুরন্ত গতিতে।
প্রায় মাস খানেকেরও বেশি সময় ধরে চারিদিকে জ্বর, সর্দি,কাশির প্রবণতা ছিল ঘরে ঘরে। অনেকেই এটিকে ঋতু পরিবর্তন কালীন আর পাঁচটা ভাইরাল ফিভার ভেবে ভুল করেছিলেন। কিন্ত পাঁচ-ছ'দিনের মাথাতেও যখন জ্বর কমছে না, বুকে কফ জমে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে তখন শিশুদের নিয়ে চিন্তায় পড়েন অভিভাবকেরা। হাসপাতালের শিশু বিভাগগুলিতে পড়ে যায় অসুস্থ শিশুদের দীর্ঘ লাইন। এর মধ্যেই কিছুদিন আগে বি. সি. রায় শিশু হাসপাতালে মারা যায় দু টি শিশু। এদের নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে ধরা পড়ে ভয়ঙ্কর ভাইরাস অ্যাডেনো-র উপস্থিতি। জানা যায় এর মূলত দু'টি স্ট্রেইন মারাত্মক। একটি টাইপ-৩ আর একটি টাইপ-৭।
বর্তমানে যে-কোনও শিশু হাসপাতালে অথবা হাসপাতালের শিশু বিভাগ গুলিতে তিল ধারণের জায়গা নেই। বাচ্চার সুরক্ষার তাগিদে বাব-মায়েরা চিন্তিত মুখে ভিড় করে আছেন ওয়ার্ড গুলিতে। কিন্ত এতে সংক্রমণ আরও দ্রুত ছড়ানোর আশঙ্কা।
এই রোগের সঙ্গে কোভিডের বেশ কিছু মিল রয়েছে। আবার রয়েছে অমিলও। দু'টি ক্ষেত্রেই রোগীর জ্বর আসবে এবং চার-পাঁচদিনের আগে নামতে চাইবে না। প্রচন্ড হাঁচি-কাশি হতে পারে, সাথে গলাব্যথা, মাথা ধরা। অমিল এখানেই যে এর উপসর্গ কোথাও কোথাও কোভিডের থেকেও মারাত্মক। বিশেষ করে এই রোগে বমি হবার সম্ভাবনা। ফুসফুসে কফ জমে শরীরে বাসা বাঁধছে নিউমোনিয়া। কোনও কোনও ক্ষেত্রে চোখ লাল হচ্ছে এবং তার থেকেও সংক্রমণ ঘটছে। এই রোগে যে কোনও বয়সী মানুষই কাবু হয়ে পড়লেও মৃত্যুর ঘটনা এখনও অবদি কেবলমাত্র শিশুদের ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে যাদের বয়স ১ বছর থেকে ৮ বছরের মধ্যে। কারণ এই বয়সী শিশুদের ইমিউনিটি পাওয়ার খুব একটা শক্তিশালী নয়। ১বছরের নীচের বাচ্চারা মাতৃদুগ্ধ থেকে এন্টিবডি লাভ করে। ফলে তাদের মধ্যে এই প্রবণতা কম দেখা যাচ্ছে।
কি কি সাবধানতা পালন করবেন? [
] শিশুর ক্ষেত্রে জ্বর আসলেই সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখান। একদম গোড়াতেই যদি সরানো যায়, অসুখ ছড়াবে না।
[ ] যেহেতু এই রোগের এখনও নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ নেই তাই উপসর্গ অনুযায়ী, ওজন মেপে ডাক্তারবাবু ওষুধ দেন। অযথা নিজে নিজে ডাক্তারি করবেন না।
[ ] বাচ্চার বুকে কফ জমে নিউমোনিয়া যাতে না হয় লক্ষ রাখবেন।
[ ] কাশি হলে নিয়ম করে গার্গেল, ভেপার নেওয়া ইত্যাদি চলবে।
[ ] ফলের রস, পুষ্টিকর খাদ্য, পরিমাণ মতো ডায়েটই রোগীর পথ্য। এতে ইমিউনিটি বৃদ্ধি পাবে। সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জল।
[ ] চোখে সংক্রমণ ঘটে থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আই-ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
[ ] বাচ্চার জ্বর, সর্দি, কাশি হলে স্কুলে না পাঠানোই ভালো। এতে করে অন্যান্য বাচ্চাদের মধ্যেও সংক্রমণ হতে পারে।
[ ] মাস্ক ব্যবহার করুন। নিয়মিত হাত সাবান দিয়ে ধুতে বলুন শিশুকে ও স্টেরালাইজ করান।
ছবি: সংগৃহীত
Leave Comments