নীলাঞ্জন রায়চৌধুরী : ধরুন আপনি আজকে হঠাৎই লক্ষ্য করলেন যে আপনার অফিসের বস রোজ একই ড্রেস পরে বিগত দুইমাস ধরে অফিসে আসছেন। তাঁর জামা কেনার সামর্থ্য নেই, এটা নিশ্চই কারণ হতে পারে না! অতএব, ব্যাপারটা অদ্ভুত। আবার দেখবেন, আমাদের আশেপাশেই এমন কিছু মানুষ আছে যাঁরা ভোর চারটের সময় উঠে ঠান্ডা জলে স্নান করেন, শীতকাল, বর্ষাকাল কিছুই পরোয়া করেন না! আজব অভ্যেস তাই না। আপনাদের দুটো ঘটনা বলি, আইনস্টাইনের নাম শোনেনি এমন মানুষ এই পৃথিবীতে বিরল। বিজ্ঞানের দুর্দান্ত আবিষ্কারের জন্য তিনি সুবিদিত। কিন্তু যদি আপনি শোনেন যে এই বিজ্ঞানী হঠাৎই ঘাসের উপরে বসে থাকা ফড়িং কচকচ করে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতেন।অথবা পাহাড়ের কোনো দুর্গম পথে যেখানে মানুষ হয়ত পাখি দেখতে যায়, সেখানে মাঝে মাঝেই হয়ত দেখা যেত যে একা দাঁড়িয়ে আইনস্টাইন মাটির দিকে তাকিয়ে ভায়োলিন বাজাচ্ছেন এবং তাঁর চোখ দিয়ে অঝোরে জল পড়ছে! লাইট বাল্ব এর আবিষ্কর্তা থোমাস আলভা এডিসনের নাম আমরা মোটামুটি সবাই জানি। তাঁর পরীক্ষাগারে ছাত্রেরা শিক্ষানবীশি করতে এলে তিনি তাঁদের এক বাটি সুপ খাওয়াতেন। যে সুপ খাওয়ার আগে তাতে নুন ছড়াতো তাঁকে তৎক্ষণাৎ বাদ দিয়ে দিতেন, যে প্রথমেই সুপ খাওয়া শুরু করতো তাঁকে গ্রহণ করতেন। তাঁর যুক্তি ছিল যে নুন ছড়াচ্ছে সে আগে থেকেই বড় বেশি ধৃষ্টতা নিয়ে চলছে। অতএব সে কখনোই সত্যকে সহজে দেখতে পাবে না। আজ,১০ ই জানুয়ারি উপরে বর্ণিত এই সকল মানুষের দিন যাকে বলে পিকুইলিয়ার পিপল ডে। আজকের দিন সেই সব মানুষের দিন যাঁরা নিজেদের কাজের সম্পর্কে একগুঁয়ে, হাজার সমালোচনা শুনেও নিজের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়নি। সমাজের হাস্য পরিহাস উপেক্ষা করেও নিজেদের অদ্ভুত অভ্যেস থেকে সরে আসেনি। যাঁরা শত শত প্রতিকূলতা পার করেও সত্যের পথে অবিচল থেকেছে, যেটা ঠিক, সেটার জন্য জীবন বিসর্জন দিয়েছে, তথাকথিত সাধারণের মধ্যে থেকেও যাঁরা নিজগুণে অসাধারণ। নিজস্ব পোশাক পরিচ্ছদেও কটাক্ষ উপেক্ষা করে সাবলীল, আজকে তাঁদের দিন। আজকের দিন তাঁদের জন্য পালন করা হয় যাঁরা চিরকাল নিজের হৃদয়ের কথা শুনেছে, সমালোচনার তোয়াক্কা না করেই। আজকে সবার হৃদয়ের দিন, তাই যা ইচ্ছে করে সেটা আজই করে ফেলার দিন।
ছবি : ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত।
Leave Comments