• India
  • Last Update 11.30 am
  • 29℃ Kolkata, India
news-details
Sports

'ডিসিপ্লিন' 'ডেডিকেশান'-এর সম-অর্থক‚৩৫ এ পা মুকুটহীন বিরাট রাজার

ad

ফুটবল বিশ্বে লিওনেল মেসিকে যদি লিওনার্দো দা ভিঞ্চির সঙ্গে তুলনা করা হয় ক্রিকেটের ক্ষেত্রে সেই মুকুট টা কোনরকম বাদানুবাদ ছাড়া উঠবে বিরাটের মাথায়। শচীন পরবর্তী যুগকে তিনি টেনেছেন একার হাতেই‚ নির্বিচারে ব্যাট হাতে শাসন করছেন ট্রেন্ট বোল্ট‚ মিচেল স্টার্ক‚ হ্যারিস রাউফদের। দিল্লীর ছোট্ট এক গলি থেকে ঊঠে এসে 'কিং কোহলি' হয়ে ওঠার জার্নিটা সহজ ছিল না একেবারেই।

 

সালটা তখন ২০০৬। ভারতের সবথেকে প্রেস্টিজিয়াস ঘরোয়া টুর্নামেন্ট-এ কর্ণাটকের বিরুদ্ধে খেলছে দিল্লি। কোহলি তখন সদ্য আঠারো। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে ৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন বিরাট। হঠাৎ করেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে গেলেন বাবা প্রেম কোহলি। শত চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা করা গেল না। কি হলো ছেড়ে পরলোকের দিকে গমন করলেন তাঁর বাবা। নিজের পিতার মৃত্যুতে শক্ত হলেও কর্তব্য থেকে এক চুলও নড়েন নি। বাবার মৃত্যুর দিনই মাঠে ফিরেছিলেন বিরাট। সেদিন শতরান হাতছাড়া হলেও নিজের স্কোরবোর্ডে আরও ৫০ রান যোগ করেছিলেন বিরাট। চতুর্থ দিনের শেষে বিরাট কোহলির স্কোর ছিল ৯০। কর্ণাটকের বিরুদ্ধে ওই ম্যাচ ড্র করেছিল দিল্লি। কিংবা স্বজনপোষণের জন্য বাদ যেতে হয়েছিল দিল্লীর অনূর্ধ্ব ১৪ দল থেকেও। বাদ গিয়েও নিজের উপর বিশ্বাস হারান নি‚ উল্টে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে সবাইকে দেখিয়ে দিয়েছেন‚ 'আই এম দ্যা রুলার অফ দিস গেম।'

 

২০১১-এর বিশ্বকাপ ফাইনাল।‌ প্রথমে ব্যাট করে ভারতকে ২৭৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা দেয় শ্রীলঙ্কা। আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছিল খুব সহজেই দ্বিতীয় বিশ্বকাপ ঘরে তুলবে ভারত। কিন্তু ৩১ রানে দুই উইকেট চলে গিয়ে ব্যাকফুটে দল। মালিঙ্গার বিষাক্ত ডেলিভারিতে শচীন আউট হতেই পিনড্রপ সাইলেন্স গোটা ওয়াংখেড়েতে। তারপরই ঘটল সেই নতুনের আগমন। গম্ভীরকে সঙ্গে নিয়ে দুরন্ত পার্টনারশিপ। মালিঙ্গা‚ পেরেরা‚ কুলশেখরাদের বিন্দুমাত্র ভয় না পেয়ে কভার‚ মিডঅন শট খেলতে পেরেছিল বছর ২৪ এর ছেলেটা। ৪৯ বলে ৩৫ রানে আউট হওয়ার আগেই ম্যাচের ভিত তৈরি করে দিয়েছিল সে। তারপর বাকিটা তো ইতিহাস। ধোনি‚ গম্ভীরের ব্যাটিং নিয়ে আলোচনা হয়‚ আলোচনা হয় জাহির খানের বোলিং নিয়েও‚ তবে এর মধ্যে ব্রাত্য থেকে যায় বিরাটের সেই লড়াই‚ সেদিন তিনি উইকেটে দাঁড়াতে না পারলে হয়তো ভারত আজ পারতো না বিশ্ব জয় করতে ।

 

 

ডিসিপ্লিন‚ ডেডিকেশানের সমার্থক শব্দ কোহলি নিজেই। ২০১৬ সালে হাতে সেলাই নিয়েও পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে ১১৩ রানের সেই বিধ্বংসী ইনিংস। দল যখনই খাদের কিনারায় গেছে ত্রাতার ভূমিকায় নেমে এসেছেন। মিরপুরের সেই ধানক্ষেতের মতো পিচ হোক বা হালের ২০২২ এর পাকিস্তানের সঙ্গে বীরোচিত ইনিংসে উদ্ধার কর্তা তিনিই। তিনিই দেখিয়েছেন অষ্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও স্লেজিং করে মাইন্ড গেম খেলা যায়। রেকর্ড বুককে পিছনে ফেলে ৭৮ সেঞ্চুরি মালিক। ভালো থাকুন কোহলি আর এভাবেই এগিয়ে নিয়ে যান ভারতীয় ক্রিকেটকে।

You can share this post!

Leave Comments